পর্যটন নগরী টেকনাফ উপজেলার পুর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত পাশ^বর্তী দেশ মিয়ানমার। এই দেশ থেকে দীর্ঘ বছরে পর বছর ধরে টেকনাফের নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জল সীমা পাড়ি দিয়ে পাচার হয়ে আসছে লক্ষ লক্ষ মরন নেশা ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য। এই অবৈধ মাদক পাচার চালিয়ে যাচ্ছে টেকনাফ, কক্সবাজার, চট্রগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী গডফাদার ও তাদের সহযোগীরা। এই মাদক দ্রব্য পাচার প্রতিরোধ করতে সীমান্ত রক্ষি বিজিবি ও আইন শৃংখলা বাহিনীর অন্যন্যা সদস্যরা দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছে। অথচ মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের নিত্য নতুন কৌশলে পাচার কাজ অব্যাহত রেখেছে। সেই সুত্র ধরে টেকনাফ উপজেলা সীমান্ত রক্ষি ২ বিজিবি সদস্যরা প্রতিনিয়ত আটক করে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য। তবে আটককৃত মাদক দ্রব্য গুলোর মধ্যে উদ্ধার হওয়া বেশির ভাগ মাদকের সাথে কোন পাচারকারিকে আটক করতে সক্ষম হয়নি বিজিবি। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে: কর্ণেল আবুজার আল জাহিদের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাত্র ৭ মাসের সাড়াঁশি অভিযানে ৮৩ কোটি টাকার মরন নেশা ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। গতকাল ১৭ অক্টোবর আটককৃত মালিকবিহীন মাদকদ্রব্য গুলো ধ্বংসকরণের জন্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে টেকনাফ ২ বিজিবি। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল তানভীর আলম খান। উক্ত ধ্বংসকরণ অনুষ্টানে সভাপতিত্ব করেন টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে: কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শফিউল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোমেনা আক্তার, টেকনাফ মডেল থানার ওসি আব্দুল মজিদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ উপজেলা কর্মকর্তা তপন কান্তি শর্মা। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র সাংবাদিক জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, টেকনাফ শুল্ক গুদামের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ, টেকনাফ মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই কাঞ্চন কান্তি দাশ। সভায় প্রধান অতিথি সেক্টর কমান্ডার তার বক্তব্যে বলেন, সীমান্ত প্রহরী বিজিবি সদস্যরা দিন রাত পরিশ্রম করে সীমান্তের চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় টেকনাফ ২ বিজিবি সদস্যরা সফল অভিযান চালিয়ে মাত্র ৭ মাসের ব্যবধানে প্রায় ৮৩ কোটি টাকার ইয়াবা সহ বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় এই মাদক দ্রব্য প্রতিরোধ করার জন্য টেকনাফ উপজেলার কর্মরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মিডিয়াকর্মীসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে টেকনাফসহ সারাদেশে যে ভাবে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে যুব সমাজ। তা যদি আমরা কঠোরভাবে দমন করতে না পারি তাহলে এমন একদিন আসবে দেশের নেতৃত্ব শূণ্যের কোঠায় চলে আসবে। সভা শেষে চলতি বছরের গত ২১ এপ্রিল হতে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্ট হতে উদ্ধারকৃত মালিক বিহীন ২৬ লক্ষ ৮৯ হাজার ৭শ ৩০পিস ইয়াবাসহ প্রায় ৮৩ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য ধ্বংস করা হয়।
পাঠকের মতামত: